, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দামুড়হুদায় একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে জখম: নিহত ১, তিন জনের অবস্থা আশংকা জনক চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে আরো ১ জনের মৃত্যু, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৭ চুয়াডাঙ্গায় কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কমিটির সভা: সারের পর্যাপ্ততা ও সঠিক ব্যবহার নিয়ে আলোচনা, কৃষকদের পাশে থাকার অঙ্গীকার চুয়াডাঙ্গায় মদ্যপানে ৬ জনের মৃত্যু, অসুস্থ ৩ জন চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত মদপানে ৬ জনের মৃত্যু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারেক রহমান জীবননগর উথলীতে নিহত দুই ভাইয়ের পরিবারের খোঁজ নিলেন বাবু খান দর্শনায় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে স্বর্ণজয়ী জিহাদের হাতে উপহার দিলেন বাবু দামুড়হুদায় পুকুরে গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে ৬ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলল দুর্বৃত্তরা শহীদ রফিকুল ইসলামের ১২তম শাহাদাত বার্ষিকীতে চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রশিবিরের দোয়া মাহফিল ও কবর জিয়ারত

চুয়াডাঙ্গায় মুখী কচু চাষে লোকসানের আশঙ্কা, পুঁজি হারানোর শঙ্কায় কৃষকরা

  • প্রকাশের সময় : ০২:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
  • ৯২ পড়া হয়েছে

 

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে অধিক লাভের আশায় মুখী কচু চাষে ঝুঁকেছিলেন কৃষকরা। তবে উৎপাদন খরচ বেশি ও বাজারমূল্য কম থাকায় এবার পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন অনেকেই। অতিবৃষ্টিতে নিচু জমির কচু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতি আরও বাড়িয়েছে।

উপজেলার উথলী, আন্দুলবাড়িয়া, রায়পুর, হাসাদাহ, বাঁকা, মনোরপুর ও সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ফসলি জমিতে ব্যাপক হারে মুখী কচুর আবাদ হয়েছে। অনেক জমিতে কচুর পাতা নষ্ট হয়ে গেছে এবং পানিতে ভাসছে গাছ। কিছু কৃষক এখনো বাজারে ভালো দামের আশায় কচু তুলে বিক্রি করছেন না, আবার কেউ খুচরা বিক্রির চেষ্টা করছেন।

চাষিরা জানান, বিঘাপ্রতি মুখী কচু চাষে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। উৎপাদিত কচু বর্তমানে ভালো মানের হলেও বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। বিঘাপ্রতি অন্তত ৮০ হাজার টাকা বিক্রি না হলে তাদের লাভ তো দূরের কথা, মূলধনও ফেরত আসবে না।

সুবোলপুর গ্রামের কচু চাষি আব্দুস ছাত্তার জানান,“৪০ শতক জমিতে কচু চাষ করে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা, এর সঙ্গে জমি মালিককে দিতে হবে ২০ হাজার টাকা। মাসখানেক আগে এক ক্রেতা ১ লাখ টাকা বললেও এখন মাত্র ৬০ হাজার দাম বলছে। এতে কিচ্ছু থাকবে না।”

উথলী গ্রামের তরুণ কৃষক কৌশিক রহমান বলেন,“দেড় বিঘা জমির অর্ধেক পানিতে ডুবে গেছে। যেগুলো আছে, অতিবৃষ্টিতে তারও অবস্থা ভালো না। বাজারে কেজি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে বিক্রি করলে শ্রমিক খরচ দিয়েই টাকা শেষ হয়ে যাবে।”

আরেক কৃষক লাবু মল্লিক বলেন,“গতবার কচু বিক্রি করে লাভ হয়েছিল, এবার খরচ বেশি, দাম কম। জমি সেচ দিতে হয়, সার লাগে বেশি, শ্রমিক খরচও বেশি। কচু বিক্রির সময় হলেও ভালো দাম না থাকায় বিক্রি করছি না।”

স্থানীয় কচু ব্যবসায়ীরা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে মানুষের কচুর চাহিদা কমে গেছে। সেই সঙ্গে বাজারে আলুর দাম কম থাকায় অনেকেই আলুর দিকে ঝুঁকছেন। তবে বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে কচুর বাজার কিছুটা চাঙ্গা হতে শুরু করেছে।

জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন,“চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬৩ হেক্টর জমিতে মুখী কচুর আবাদ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন ৯০ থেকে ১০০ মণের মতো হবে বলে আশা করছি।”

তিনি আরও বলেন,“এ বছর সবজির দাম তুলনামূলক কম। আবার কৃষকরা অধিক ফলনের আশায় অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করছেন, এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। পরিমিত সার ব্যবহারের বিষয়ে আমরা সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

জনপ্রিয়

দামুড়হুদায় একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে জখম: নিহত ১, তিন জনের অবস্থা আশংকা জনক

চুয়াডাঙ্গায় মুখী কচু চাষে লোকসানের আশঙ্কা, পুঁজি হারানোর শঙ্কায় কৃষকরা

প্রকাশের সময় : ০২:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

 

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে অধিক লাভের আশায় মুখী কচু চাষে ঝুঁকেছিলেন কৃষকরা। তবে উৎপাদন খরচ বেশি ও বাজারমূল্য কম থাকায় এবার পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন অনেকেই। অতিবৃষ্টিতে নিচু জমির কচু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতি আরও বাড়িয়েছে।

উপজেলার উথলী, আন্দুলবাড়িয়া, রায়পুর, হাসাদাহ, বাঁকা, মনোরপুর ও সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ফসলি জমিতে ব্যাপক হারে মুখী কচুর আবাদ হয়েছে। অনেক জমিতে কচুর পাতা নষ্ট হয়ে গেছে এবং পানিতে ভাসছে গাছ। কিছু কৃষক এখনো বাজারে ভালো দামের আশায় কচু তুলে বিক্রি করছেন না, আবার কেউ খুচরা বিক্রির চেষ্টা করছেন।

চাষিরা জানান, বিঘাপ্রতি মুখী কচু চাষে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। উৎপাদিত কচু বর্তমানে ভালো মানের হলেও বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। বিঘাপ্রতি অন্তত ৮০ হাজার টাকা বিক্রি না হলে তাদের লাভ তো দূরের কথা, মূলধনও ফেরত আসবে না।

সুবোলপুর গ্রামের কচু চাষি আব্দুস ছাত্তার জানান,“৪০ শতক জমিতে কচু চাষ করে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা, এর সঙ্গে জমি মালিককে দিতে হবে ২০ হাজার টাকা। মাসখানেক আগে এক ক্রেতা ১ লাখ টাকা বললেও এখন মাত্র ৬০ হাজার দাম বলছে। এতে কিচ্ছু থাকবে না।”

উথলী গ্রামের তরুণ কৃষক কৌশিক রহমান বলেন,“দেড় বিঘা জমির অর্ধেক পানিতে ডুবে গেছে। যেগুলো আছে, অতিবৃষ্টিতে তারও অবস্থা ভালো না। বাজারে কেজি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে বিক্রি করলে শ্রমিক খরচ দিয়েই টাকা শেষ হয়ে যাবে।”

আরেক কৃষক লাবু মল্লিক বলেন,“গতবার কচু বিক্রি করে লাভ হয়েছিল, এবার খরচ বেশি, দাম কম। জমি সেচ দিতে হয়, সার লাগে বেশি, শ্রমিক খরচও বেশি। কচু বিক্রির সময় হলেও ভালো দাম না থাকায় বিক্রি করছি না।”

স্থানীয় কচু ব্যবসায়ীরা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে মানুষের কচুর চাহিদা কমে গেছে। সেই সঙ্গে বাজারে আলুর দাম কম থাকায় অনেকেই আলুর দিকে ঝুঁকছেন। তবে বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে কচুর বাজার কিছুটা চাঙ্গা হতে শুরু করেছে।

জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন,“চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬৩ হেক্টর জমিতে মুখী কচুর আবাদ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন ৯০ থেকে ১০০ মণের মতো হবে বলে আশা করছি।”

তিনি আরও বলেন,“এ বছর সবজির দাম তুলনামূলক কম। আবার কৃষকরা অধিক ফলনের আশায় অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করছেন, এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। পরিমিত সার ব্যবহারের বিষয়ে আমরা সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।